Posts

Showing posts from June, 2019

একজন বদি মিয়ার গল্প (খন্ড ‌এক)

Image
বদি মিয়া মৃত্যু সহ্যা! সবাই তার চারপাশে ঘিরে আছে, অবাক ব্যাপার বদি মিয়া ছাড়া ঘরে তার পরিবার পরিজন কারো চোখে কোনো পানি নেই, সবাই যেন মৃত্যুর আগে মানুষের কষ্ট কেমন হয় সেই ম্যাজিক দেখার আগ্রহ নিয়ে ফেল ফেল করে তাকিয়ে আছে। ঘরের মধ্যে এক বিচ্ছিরি গন্ধ! কিছু ধুপ, আর আগর বাতির। সবাই যেন তার মৃত্যুর বার্তা নিয়ে আগে থেকে তৈরি! বদি মিয়া ঝাপ্সা চোখে স্পষ্ট সালমা বেগমকে দেখছে!এই ৫০ বছরেও ওকে কি শুভ্র দেখাচ্ছে। চুল গুলো আজও বাধতে শেখেনি, কিন্তু এলোমেলো সেই চুলের মায়া মুখ খানি কি প্রশান্তির! যেন এক শান্তির দেবী! সালমা বেগম ঠিক তার পাশে বসা। বদী মিয়া আর কারো না, শুধু সালমার দিকে তাকিয়ে আছে। তার ভেতরটা চিৎকার করছে, ক্ষমা চাচ্ছে। আশ্চর্য!বদি মিয়ার সেই চিৎকার সালমা বেগম শুনছে না। এই ঘরের কেউই শুনছে না। সেই চিৎকার প্রতিধ্বনি হয়ে বদী মিয়ার কানে যাচ্ছে। কি অসহ্য আর্তনাদ! বদী মিয়ার মৃত্যুর যন্ত্রনা আরো প্রখর হতে থাকে। তার গলা শুকিয়ে ওষ্ট কাঠ। সালমা বেগম শুধু তাকিয়ে আছে, যেন বদী মিয়ার মৃত্যুর যন্ত্রনা দেখার প্রতীক্ষায়। হঠাৎ তিনি দেখলেন সালমা বেগম উঠে চলে যাচ্ছে, তাহলে কি সে বদী মিয়ার মৃত্যু যন্ত্রনা দেখবে...

ইচ্ছে পূরণ

Image
দু দিন বাদে ঈদ! হিমিকা হসপিটালের বেডে শুয়ে। রাত ৩ টা। সেহরির জন্য বলেই হয়ত এত রাতেও আশে পাশে বেশ আলো। বুকের ভেতর কি কি যন্ত্রপাতি দেয়া। অস্থির লাগছে। হিমিকার খুব চা খেতে ইচ্ছে করছে। আর বাসায় ফেলে রাখা যে উপন্যাসের এখনো কয়েক পাতা বাকি তার জন্য বিরক্ত লাগছে। হসপিটাল থেকে যে বাসা খুব বেশি দূর তা না, তার ইচ্ছে হচ্ছে মি. ইন্ডিয়ার মুভির সেই অদৃশ্য পোশাক পড়ে বাসায় গিয়ে বইটা নিয়ে এসে আবার হসপিটালের বেডে শুয়ে পড়বে! ভাবতেই তার মজা লাগছিল। সি সি ইউ তে কাউকে ঢোকা নিষেধ। কাউকে যে চায়ের কথা বলবে তার উপায় নেই। নাহ! আর ভালো লাগছেনা, হাতের স্যালাইনটা খুলে ফেললো সাহস করে, বুকের ব্যাথাটা নাই! খামোখা শুইয়ে রেখেছে। রুমটা নতুন, এখনো নতুন রঙের বিদঘুটে গন্ধ। হিমিকা বেড থেকে নামল, বুকের যন্ত্রপাতি গুলো খুলতে পারলে শান্তি পেত! নাহ ওগুলো খোলা যাচ্ছেনা, একটা বড় মেশিনের সাথে আটকানো। হিমিকার বড্ড অস্থির লাগছে। বেডের উপর বসে পাশে জানালার দিকে তাকাল। দূরের ল্যাম্পপোস্ট, কোথাও কোন শব্দ নেই। হিমিকার মনে হচ্ছে বইটা শেষ না করে য মদি মরে যাই তাহলে বিপদ। নাহ যে করেই হোক বইটা আনাতে হবে। হঠাত হিমিকা রুমের ভেতর বেলী ফুলের ...

রক্তিম কৃষ্ণচূড়া

Image
ভোর বেলা হিমিকা তার সেই প্রিয় রাস্তা ধরে হাটছে।প্রশান্তির ঠান্ডা বাতাস তাকে ছুয়ে দেয়! রাস্তার পাশ ধরে শুধু কৃষ্ণচূড়া।হঠাৎ তার চোখে ভেসে উঠে কোন এক পড়ন্ত বিকেলে হিমালয়ের সাথে থাকা মূহুর্তঃ ---------------------------------------------------------------- হিমালয়ঃ মনে করো এক বিশাল কৃষ্ণচূড়া ফুলের সিংহাসন গড়ে দিলাম তোমার জন্য, তোমার এক পৃথিবী ভালোবাসার জন্য সেখানে বসব আমরা পড়ন্ত বিকেলে ঠিক গাছের 'পরে নীলচে আকাশ নিচে! হিমিকাঃ আমার খোঁপায় দিবে কৃষ্ণচূড়ার থোকা থোকা সাজানো পুষ্পমঞ্জরির ঢল চাইব না আমি!জানবে মনে হয়ত তাই এই কবিতা শুধু কানে ফিসফিসিয়ে বলবে, "প্রিয়া,কৃষ্ণচূড়ার ওই লম্বাঢলটায় খুব মানাতো তোমার খোঁপা!" হিমালয়ঃ আরো অবাক করে ঢের কাছে এসে ভয় পাইয়ে বললে- "কৃষ্ণচূড়া ফুল দিয়ে শাড়ী বানাবো, রোজ জড়াব তোমায় এই লাল-হলুদের মিষ্টি ভালোবাসায়!" হিমিকা এই শুনে হিমালয়ের হাতটা শক্ত করে ধরে বলেঃ আজ আমার কৃষ্ণচূড়া দিবস আজ আমি কৃষ্ণচূড়া ছাড়া কোনো ফুল দেখব না আজ কৃষ্ণচূড়া ছাড়া কোনো কবিতা হবে না আজ কৃষ্ণচূড়া ছাড়া কারো ভালোবাসা জমবে না! ---------------------------...