একজন বদি মিয়ার গল্প (খন্ড ‌এক)

বদি মিয়া মৃত্যু সহ্যা! সবাই তার চারপাশে ঘিরে আছে, অবাক ব্যাপার বদি মিয়া ছাড়া ঘরে তার পরিবার পরিজন কারো চোখে কোনো পানি নেই, সবাই যেন মৃত্যুর আগে মানুষের কষ্ট কেমন হয় সেই ম্যাজিক দেখার আগ্রহ নিয়ে ফেল ফেল করে তাকিয়ে আছে।
ঘরের মধ্যে এক বিচ্ছিরি গন্ধ! কিছু ধুপ, আর আগর বাতির। সবাই যেন তার মৃত্যুর বার্তা নিয়ে আগে থেকে তৈরি!
বদি মিয়া ঝাপ্সা চোখে স্পষ্ট সালমা বেগমকে দেখছে!এই ৫০ বছরেও ওকে কি শুভ্র দেখাচ্ছে। চুল গুলো আজও বাধতে শেখেনি, কিন্তু এলোমেলো সেই চুলের মায়া মুখ খানি কি প্রশান্তির! যেন এক শান্তির দেবী! সালমা বেগম ঠিক তার পাশে বসা। বদী মিয়া আর কারো না, শুধু সালমার দিকে তাকিয়ে আছে। তার ভেতরটা চিৎকার করছে, ক্ষমা চাচ্ছে। আশ্চর্য!বদি মিয়ার সেই চিৎকার সালমা বেগম শুনছে না। এই ঘরের কেউই শুনছে না। সেই চিৎকার প্রতিধ্বনি হয়ে বদী মিয়ার কানে যাচ্ছে। কি অসহ্য আর্তনাদ! বদী মিয়ার মৃত্যুর যন্ত্রনা আরো প্রখর হতে থাকে। তার গলা শুকিয়ে ওষ্ট কাঠ। সালমা বেগম শুধু তাকিয়ে আছে, যেন বদী মিয়ার মৃত্যুর যন্ত্রনা দেখার প্রতীক্ষায়।
হঠাৎ তিনি দেখলেন সালমা বেগম উঠে চলে যাচ্ছে, তাহলে কি সে বদী মিয়ার মৃত্যু যন্ত্রনা দেখবে না?!
বদী মিয়ার চোখ ঝাপসা আরও হয়ে আসে, সে শুধু সালমা বেগমের চলে যাওয়া দেখছে! ভেতরে আবারও চিৎকার করছে, সালমা আমায় ক্ষমা করে দিও!  কিন্তু সেই চিৎকার সালমা বেগম শুনছে না। বদী মিয়া ছটফট করছে, মৃত্যু যন্ত্রনা থেকেও যন্ত্রনা পাচ্ছে তার পাপের অনুশুচনায়। ক্ষমা না চাইতে পারার যন্ত্রনা।
চোখে অন্ধকার নামে, তলিয়ে নিতে যাচ্ছে তাজে মৃত্যুর দেবদূত!

লাফ দিয়ে ঘুম থেকে উঠে বসলেন বদী মিয়া! তার শরীর জুড়ে ঘাম! শ্বাস আটকে আসছে! যেন মৃত্যু যন্ত্রনা এখুনি পাচ্ছে! গত বিশটা বছর তার এই স্বপ্ন তাকে তাড়া করে। একই ভাবে ভয়ে তার ঘুম ভাংে।
প্রথমবার যখন দেখেছিল, তারপর থেকেই সে সালমা কে খুজেছেন। কিন্তু পায়নি। বদী মিয়া জানে তাকে এইভাবেই মৃত্যু যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে। হয়তবা আরোও ভয়ংকর।


Comments

Popular Post

তুমি আমার মানে, পুরোটাই আমার

মুক্ত করে দিব পাখির মত

মা, মামুনি, আম্মু, আম্মা, মম