কুরবানী
লালীঃ কিরে, কি নাম তোর? কতক্ষন ধরে ধুম মাইরা বইসা আসোস, খাস না, চুপ কেন?
মিঠুঃ বাপে আদর কইরা নাম দিসিল মিঠু! ক্ষিদা নাই! বাপজানরে অনেক মনে পরতাসে! নিজেগো গেরামের মাঠ মনে পরতাসে! বাপ দিয়া যাইত, সারাদিন মাঠে ঘুরতাম।
লালীঃও আইচ্ছা! আমি ভাবসি কালকের সকালের কথা মনে কইরা খাস না। আর এইগুলা মনে কইরা লাভ কি! খাইয়া ল!
মিঠুঃ প্রত্যেক বেলায় বাপজানের হাতে খাইসি, আমি খাইতাম আর বাপজান মাথায় হাত বুলাইত! আসার সময় জড়াইয়া মেলা কানসে, কইসে -"চুপ কইরা হাইট্টা যাবি, যেন একটা লাঠির বাড়ি না খাওন লাগে। তোরে আমি কোনদিন মারি নাই, তাইলে মাইনসের হাতে কেন খাবি! তোরে কিন্না লইসে, নবাবের মত হাইট্টা যাইবি! আর ডড়াইবি না! আল্লাহ কষ্ট দিব না! আমি দুয়া কইরা দিসি তোর কোনো কষ্ট হইব না"-এই কইয়া অনেক্ষন বাপজান বইলা আদর কইরা কানসে!
লালীঃ থাক কান্দিস না! তোরে তো কালকে সকালে লইয়া যাইব ঈমামের কাছে। আমি শুনলাম আমার পালা পরশু! যাক, আরেকটা দিন বাচুম!
মিঠুঃ তোমার কি ডর লাগে না? আর তোমার পিঠের ওইদিকে কিয়ের দাগ?পাও দেখি কাইট্টা গেসে!
লালীঃ ডর!!!!! কিয়ের ডর? মরনরে ডরাইনা। তুই অনেক আদরে বড় হইসস! আমি এইডি পাইনাই! মার দুধ টাও ঠিক মত পাই নাই, বেইচ্চা দিসে আমারে! এরপর কত মাইনসের লগে আসিলাম। কতবার শুনসি- "অনেক ভাল দাম আইসে, কাল ই এই বাজারের কসাইয়ের কাসে বেইচ্চা দিব"। মরনের কথা অনেক শুনসি! তাই আর ডরাই না!
পায়ে গাড়ি দিয়া নামানোর সময় টিনের লগে কাইট্টা গেসে। ব্যাথায় হাটতে পারি নাই এইটা তারা না বুইজ্জাই পিঠে মারতে মারতে আনসে, তাই পিডে দাগ বইসা গেসে! যাউজ্ঞা, তুই খাইয়া ল! অনেক্ষন দেখতেসি তুই খাস না কিছুই! কান্দিস না! এটাই আল্লাহর ইচ্ছা।
পায়ে গাড়ি দিয়া নামানোর সময় টিনের লগে কাইট্টা গেসে। ব্যাথায় হাটতে পারি নাই এইটা তারা না বুইজ্জাই পিঠে মারতে মারতে আনসে, তাই পিডে দাগ বইসা গেসে! যাউজ্ঞা, তুই খাইয়া ল! অনেক্ষন দেখতেসি তুই খাস না কিছুই! কান্দিস না! এটাই আল্লাহর ইচ্ছা।
মিঠুঃ বাপজান কইসে ব্যাথা পামুনা! কুরবানী তো ওইদিন হইলাম যখন বাপজান আমারে বেইচ্চা দিল। বাপজানরে যদি একবার জবান দিয়া কইতে পারতাম -" তোমারে ছাইড়া যাওয়ার ব্যাথা গলায় ছুড়ি বসানোর চাইতেও এই ব্যাথা বেশি!
মিঠুর চোখ দিয়া অঝোরে পানি পড়ছে! লালী উদাস মনে মিঠুর দিকে তাকিয়ে!!!!
( কাল্পনিক কিছু চিন্তা )
Comments
Post a Comment