আপনার কোন বিকল্প নেই


তাঁর বই পড়তে শুরু করলেই কোন না কোন আজব চরিত্রের সাথে নিজের কিছু মিল খুঁজে পেয়ে যেতাম। যতটুকু পেতাম না ততটুকু নিজের অজান্তেই নিজের মধ্যে আত্মস্থ করে নিতাম। কিছুটা অদ্ভূত, অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ, খুব চাপা স্বভাবের একজন হয়ে উঠলাম ধীরে ধীরে।

হঠাৎ করেই লক্ষ্য করলাম, বৃষ্টিতে ভিজতে ভালো লাগছে। জোৎস্নার নরম আলোয় উদ্ভাসিত প্রকৃতি আমার চোখে অন্যরকম সুন্দর হয়ে ধরা দিচ্ছে। স্বীকার করতে বাধ্য হলাম যে, বাঙালি মেয়েদের সবচেয়ে মায়াবতী দেখায় যখন তারা শাড়ি পরে।

একটা কল্পনার জগৎ দাঁড় করিয়ে ফেললাম। সেখানে অভিমান, রাগ, ভালোবাসা ইত্যাদি ছোটো ছোটো অনুভূতিগুলোকে বিকশিত হতে দিলাম। সম্পূর্ণ নিজের একটা জগৎ, যেখানে অন্য কারও প্রবেশাধিকার নেই। সেই জগতেই শুরু হলো আমার বসবাস। এভাবে কখন যেন আশেপাশের সবার থেকে অনেক দূরে সরে গেলাম। সবার কাছে হয়ে গেলাম অনেক দুর্বোধ্য একজন। নিজের তৈরি করা জগতে কখন যে কারারুদ্ধ হয়ে গেলাম তা টেরও পেলাম না!

এমন সময় ভাবলাম, একজন আছে, যে খুব সম্ভবত আমার এই আচরণের ব্যাখ্যা দিতে পারবে। হয়ত হিমু হয়ে কিংবা মিসির আলী। কিন্তু না। সে ব্যক্তিটি চলে গেলেন না ফেরার দেশে। ছয় বছর আগে।

ইচ্ছে ছিল তাঁর আরও অনেক রচনা পড়ে নিজের চরিত্রটির ব্যাখ্যা নিজেই বের করব। তা আর হয়ে ওঠেনি।নিজের সৃষ্টি করা গোলকধাঁধা থেকে বের হওয়া হয়নি আর।
প্রিয় হুমায়ূন আহমেদ, আপনার কোন বিকল্প নেই।


Comments

Popular Post

তুমি আমার মানে, পুরোটাই আমার

মুক্ত করে দিব পাখির মত

মা, মামুনি, আম্মু, আম্মা, মম